প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তুতি
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের নিমিত্ত আবেদনকারীদের বেশির ভাগই নিয়োগ পরীক্ষার মানবণ্টন ও সিলেবাস সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না। তাই আজকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার মানবণ্টন ও পরীক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় মোট নম্বর ১০০। যার মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় (এমসিকিউ) ৮০ নম্বর এবং মৌখিক পরীক্ষায় ২০ নম্বর। যারা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন শুধুমাত্র তারাই মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।
মান বণ্টন:
বাংলা-২০ (বাংলা সাহিত্য-৩, বাংলা ব্যাকরণ-১৭), গণিত-২০ (পাটিগণিত-৮/৯, বীজগণিত-৭/৬, জ্যামিতি-৫), সাধারণ জ্ঞান-২০ (বাংলাদেশ বিষয়াবলি- ৭/৮, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি- ৫/৬, সাম্প্রতিক বিষয়াবলি- ৮/৬), ইংরেজি- ২০, মৌখিক পরীক্ষা- ২০।
পরীক্ষা পদ্ধতি:
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে। বাংলা, গণিত, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞানের প্রতিটি বিষয় থেকে ২০টি করে মোট ৮০টি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১, প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। চারটি উত্তর ভুল হলেই কাটা যাবে ১ নম্বর।
বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি:
বাংলা: বাংলা অংশে ব্যাকরণের ওপর বেশি জোর দিতে হবে। অষ্টম-দশম শ্রেণির বোর্ড প্রণীত ব্যাকরণ বইয়ের সব অধ্যায় উদাহরণসহ ভালোভাবে পড়তে হবে। জানতে হবে কবি-সাহিত্যিকদের সাহিত্যকর্ম ও জীবনী সম্পর্কে।
ইংরেজি: ইংরেজি গ্রামারে জরমযঃ ভড়ৎসং ড়ভ াবৎন, ঞবহংব, চৎবঢ়ড়ংরঃরড়হ, চধৎঃং ড়ভ ঝঢ়ববপয, ঠড়রপব, ঘধৎৎধঃরড়হ, ঝঢ়বষষরহম, ঝবহঃবহপব ঈড়ৎৎবপঃরড়হ-এর নিয়ম জানতে হবে এবং গ্রামার বইয়ের উদাহরণ থেকে চর্চা করতে হবে। মুখস্থ করতে হবে চযৎধংব ধহফ ওফড়রসং, ঝুহড়হুস, অহঃড়হুস ভালোভাবে শিখতে হবে। বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করলে ভালো করা যাবে।
গণিত: পাটিগণিতের পরিমাপ ও একক, ঐকিক নিয়ম, অনুপাত, শতকরা, সুদকষা, লাভক্ষতি, ভগ্নাংশ, বীজগণিতের সাধারণ সূত্রাবলী থেকে প্রশ্ন থাকে। মুখে মুখে ও সূত্র প্রয়োগ করে সংক্ষেপে ফল বের করার প্র্যাকটিস করতে হবে। যাতে প্রশ্ন দেখামাত্রই সূত্র প্রয়োগ করে ফল বের করা যায়। জ্যামিতিতে ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বর্গক্ষেত্র, রম্বস, বৃত্ত ইত্যাদির সাধারণ সূত্র ও সূত্রের প্রয়োগ দেখতে হবে। মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠ্যবই বিশেষত অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণির গণিত বই অনুসরণ করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
সাধারণ জ্ঞান: প্রশ্ন বেশি আসে বাংলাদেশ অংশে বাংলাদেশের শিক্ষা, ইতিহাস, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ, ভূ-প্রকৃতি ও জলবায়ু, সভ্যতা ও সংস্কৃতি, বিখ্যাত স্থান, বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা, অর্থনীতি, বিভিন্ন সম্পদ, জাতীয় দিবস থেকে।
আন্তর্জাতিক অংশে বিভিন্ন সংস্থা, দেশ, মুদ্রা, রাজধানী, দিবস, পুরস্কার ও সম্মাননা, খেলাধুলা বিষয়ক প্রশ্ন থাকে।
সাধারণ বিজ্ঞান থেকে বিভিন্ন রোগব্যাধি, খাদ্যগুণ, পুষ্টি, ভিটামিন থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। নিয়মিত পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করতে হবে। এ ছাড়াও নিয়মিত দৈনিক জনকণ্ঠের শিক্ষা সাগর পাতাটিতে প্রকাশিত ‘প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি’ অংশটি বেশি বেশি পড়ার অভ্যাস করলে বাংলা/ইংরেজি/গণিত/বিজ্ঞান/ সাধারণ জ্ঞান প্রশ্নের উত্তর জানা সহজ হবে।
পরীক্ষার কেন্দ্রে করণীয় : প্রবেশপত্র সঙ্গে আনতে হবে। বই, উত্তরপত্র, নোট, কাগজপত্র, ক্যালকুলেটর, মোবাইল ফোনসহ ইলেকট্রনিক ঘড়ি ও কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে রাখা যাবে না। উত্তরপত্র পূরণ করতে হবে সতর্কতার সঙ্গে। অসাবধানতাবশত ভুল হলে উত্তরপত্র বাতিল হতে পারে। কালো কালির বলপয়েন্ট কলম দিয়ে ওএমআর পূরণ করা ভালো। প্রত্যেক প্রশ্নের উত্তরের জন্য একটি বৃত্তাকার ঘর ভরাট করতে হবে। একই প্রশ্নের উত্তরে একাধিক বৃত্ত ভরাট করা যাবে না সেক্ষেত্রে নম্বর কাটা যাবে। ওএমআর শিট ভাঁজ করা যাবে না। নির্ধারিত ঘর ছাড়া উত্তরপত্রের অন্য কোথাও দাগ দেয়া যাবে না। রোল নম্বর, প্রশ্নপত্রের সেট কোড, জেলা কোড, উপজেলা/থানা কোড, সেক্স কোড নম্বর অবশ্যই পূরণ করতে হবে। নইলে উত্তরপত্র বাতিল হবে। ওএমআর শিটে রোল নম্বরের ঘর পূরণ করার সময় রোল নম্বরের নিচের বৃত্তাকার ঘরগুলোতে সঠিক সংখ্যা কালো কালির বলপয়েন্ট কলম দ্বারা ভরাট করতে হবে। হাজিরা শিটে খাতার ক্রমিক নম্বর ও প্রশ্নের সেট নম্বর লিখে নির্ধারিত ঘরে প্রার্থীকে স্বাক্ষর করতে হবে।
0 Comments